অনিদ্রা সমস্যা দূর করার কার্যকরী পদ্ধতি:-
আপনার কি না ঘুমিয়ে সারারাত জেগে থাকার অভ্যাস আছে? ক্লান্ত বা ঘুম ঘুম ভাব থাকা সত্ত্বেও ঘুম দেরিতে আসছে? কিংবা মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে আর ঘুমাতে পারছেন না?
যদি উত্তর হ্যা হয়, তবে আপনি ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রাজনিত সমস্যায় ভুগছেন।
এই ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রা সমস্যাটা আসলে কি?
রাতে ঘুম না হওয়া বা মাঝ রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে আর ঘুম না আসা-এ সমস্যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রা বলা হয়। সপ্তাহে তিন দিন বা তার বেশি রাতে ঘুম না আসা, বারবার ঘুম ভেংগে যাওয়া, অল্প সময় ঘুম হওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার পর ক্লান্তি ভাব, সারাদিন খিটখিটে মেজাজে থাকা ইত্যাদি ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রার লক্ষণ।
মস্তিষ্কের নিউরো হরমোনাল অসামঞ্জস্য অনিদ্রার অন্যতম কারণ। অনিদ্রার ফলে কর্মক্ষমতা, বুদ্ধিমত্তা ও মনোযোগ কমে যেতে পারে। শারীরিক ক্ষতিও হতে পারে। যেমন, ওজনাধিক্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া এমন আরো কিছু।
সাধারণত মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তার কারণেই অনিদ্রার সমস্যা হয়ে থাকে। হতাশাগ্রস্থ বা খুব কাছের মানুষের সাথে সম্পর্কের দূরত্ব সৃষ্টি হলে বা দীর্ঘদিন ধরে ক্যাফেইন, নিকোটিন জাতীয় দ্রব্য পান করলে এ সমস্যা আরো বেশি হয়। পরিবেশগত শব্দ, কায়িক পরিশ্রম না করা বা দিনে ঘুমানোর ফলেও অনিদ্রার সমস্যা দেখা দেয়।
বর্তমান সময়ে অনিদ্রাতে ভুগছে এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। বিশেষ করে তরুণ সমাজের মধ্যে এই সমস্যার প্রভাবটা অনেক বেশি দেখা যায়।
কিন্তু বেশির ভাগ মানুষের অনেকেই জানে না কি করলে অনিদ্রার সমস্যা দূর করা যায়। ফলে অনিদ্রা সমস্যা নিয়েই বছরের পর বছর জীবন যাপন করতে হয়।
মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য ঘুম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলোর একটি। কিন্তু অনেকেই ঘুম হয় না বলে ঘুমের ওষুধ খান। এটা মোটেও ঠিক নয়। ঘুম না হলে শরীরে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকরা বলেন, ঘুম না হওয়া কোনো রোগ নয়, তবে ঘুম না হলে নানা রোগ আক্রমণ করতে পারে।
কিন্তু যখন আপনার দিনের পর দিন বা সপ্তাহে ভালো ঘুম হয় না, তখন আপনি কি করবেন?
হতাশ হবেন না। কিছু সহজ উপায় আছে যা অবলম্বনে আপনিও পারেন অনিদ্রার সমস্যাটি কাটিয়ে উঠতে।
অনিদ্রা থেকে মুক্তির উপায় :-
১. ঘুমানোর রুটিন তৈরি করা :-
বহু গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুম না হলে মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে। ঘুম যেকোনো প্রকার অসুস্থতা থেকে শরীরকে শতকরা ৫০ ভাগ সুস্থ করে তোলে।
রাতে ভালো ঘুম হওয়ার সাথে ভালো স্বাস্থ্যের একটি বিষয় জড়িয়ে থাকে। প্রতিটা মানুষের শরীরের চাহিদার উপর ঘুম নির্ভর করে।
কেউ কেউ আছেন যারা দিনে-রাতে ৫ ঘণ্টা ঘুমই যথেষ্ট মনে করেন। আবার কারো কারো ১৫-১৬ ঘণ্টা না ঘুমালে শরীরে অসুস্থতার সৃষ্টি হয়। তবে ভালো নিশ্ছিদ্র ঘুম হলে ৮ ঘণ্টাই যথেষ্ট।
তাই প্রতিদিন একটি নিদির্ষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান এবং ঘুম থেকে উঠার চেষ্টা করুন। একটি রুটিন তৈরি করুন। প্রতি রাতে ওই নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা শুরু করুন। ছুটির দিন হোক বা অন্য যে কোনো দিন, প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম থেকে উঠুন।
এই চ্যানেলটি ফলো করুন।